স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ লঞ্চঘাট-পূর্ব ইব্রাহীমপুর খেয়াঘাটে সিঁড়ি নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া ঘাটলাকে ছাউনি বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় ঘাটলার ফটকে ‘যাত্রী ছাউনি’ লেখার চেষ্টা করে সুনামগঞ্জ পৌরসভার সংশ্লিষ্টরা।
তবে সচেতন এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে এই কাজ থেকে বিরত থাকে তারা। অথচ সাঁটানো সাইন বোর্ডে প্রকল্প বিষয়ে স্পষ্ট করে লেখা আছে এটা সিঁড়ি (ঘাটলা) নির্মাণ প্রকল্প।
স্থানীয়রা জানান, গত ১৯ জুন বৃহস্পতিবার বিকেলে লঞ্চঘাটের ঘাটলার ফটকে ‘যাত্রী ছাউনি’ লেখার চেষ্টাকালে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করেন। পরে পৌরসভার সংশ্লিষ্টরা লেখা উঠিয়ে নিতে বাধ্য হন। এ ঘটনায় স্থানীয়রা প্রশ্ন- কোন স্বার্থে এমন উদ্যোগ নিয়ে ঘাটলার গেইটে ‘যাত্রী ছাউনি’ লেখার চেষ্টা করা হয়েছে?
স্থানীয়রা জানান, জেলা প্রশাসকের আশ্বাস দেওয়া গ্রামবাসীকে যাত্রী ছাউনি পেতে বিরোধিতা করতে এই অপকৌশল চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি সরকারি ভূমি দখল করে রাখা অবৈধ বসতিদের রক্ষায় নানা তৎপরতা চালানো হচ্ছে। চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি সিঁড়ি নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। ঘাটলা নির্মাণের শুরু থেকে একাধিকবার নানা অনিয়মের প্রতিবাদ করেন ইব্রাহীমপুর গ্রামবাসী।
স্থানীয়রা জানান, সিঁড়ি নির্মাণের শুরুতে পরিমাপ করতে গিয়ে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ওঠে। সংশ্লিষ্টরা তারা বেঙ্গল ওয়াটারের জায়গায় অবৈধভাবে বসবাসকারীদের এবং ব্যবসায়ীর প্রভাবের মুখে পড়ে দেড় ফুট সিঁড়ি সংকীর্ণ করে কাজ শুরু করেন। এছাড়া একাধিক স্থানে পাইলিং বল্লির প্রান্ত ছেড়ে নেট স্থাপন করে বেইজ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সিঁড়ির প্রশস্ততা কম, চওড়া হয়েছে বেশি। নদীর পানি ঘেঁষে যে সিঁড়ির ধাপ নির্মাণ করা হয়েছে, তা তড়িঘড়ি করে দুর্বল ও অগোছালোভাবে করা হয়েছে।
স্থানীয়দের বাধা নিষেধ অমান্য করে মোটরবাইক উঠানামার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অথচ নদীর উত্তরপাড়ে পাকা সিঁড়িঘাট নেই। বর্তমানে উভয় দিকে যাত্রী সাধারণ উঠানামা করতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বাইকের ব্যবস্থা রাখার কারণে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা খেয়ালে বা বেখেয়ালে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়া যেন নিত্যদিনের দুর্ঘটনা। এছাড়া মেইন রোডে সংযুক্ত সিঁড়ির গোড়ায় মাটি উত্তোলনের গর্ত থাকায় বৃষ্টির পানি ঝরণার ন্যায় নির্গত হয়। এতে পাকা রোড ও সিঁড়ি দেবে যাওয়ার আশঙ্কা বিদ্যমান।
এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের অর্থায়নে ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সিঁড়ি নির্মাণে নকশা সাঁটানো হয়নি। মানসম্মত বালু-পাথর, সিমেন্ট ও রড ব্যবহার করা হয়নি। কাজের ভাল ফিনিশিং নেই। ঠিকাদারের উপস্থিতিও দেখা যায়নি। এই কাজ দেখভালে নিয়োজিত ছিলেন পৌরসভার আনিস নামের এক কর্মচারী।
এদিকে, বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘাটলার গেইটে ‘যাত্রী ছাউনি’ লেখার চেষ্টাকালে স্থানীয়রা প্রতিবাদের বিষয়ে সুনামগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী কালীকৃষ্ণ পাল জানান, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের এই কাজে ওয়ার্ক অর্ডারের নিয়ম অনুযায়ী তা লিখে দিতে হয়। তবে ঘাটলার গেইটে না লিখলেও কিছু হবে না। আমি লিখা সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করছি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
ঘাটলাকে ছাউনি বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা!
শহরের লঞ্চঘাটে সিঁড়ি নির্মাণকাজে অনিয়ম
- আপলোড সময় : ২১-০৬-২০২৫ ১১:১০:৪৯ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ২২-০৬-২০২৫ ১২:০৫:৫০ পূর্বাহ্ন

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ